চলতি বছর এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে এডিবি। বৃহস্পতিবার সংস্থাটির প্রকাশিত ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক সাপ্লিমেন্ট’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ অঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।

গত এপ্রিলে ৫ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল সংস্থাটি। এডিবির প্রতিবেদনে এশিয়া অঞ্চলে টিকাদান পরিস্থিতির পরিসংখ্যান রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে করোনা নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।

এক ডোজ, দুই ডোজ এবং বুস্টার ডোজ মিলিয়ে টিকা নিয়েছে- বাংলাদেশে এমন জনসংখ্যা প্রায় ৭৪ শতাংশ। এর মধ্যে বুস্টার ডোজ নিয়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ। দুই ডোজ নিয়েছে ৫৪ শতাংশ। সার্বিক হিসাবে টিকা দেওয়ায় এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৯তম।

টিকাদানের এ হার নেপাল, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামসহ এশিয়ার ৪৪ দেশের মধ্যে অন্তত ২২টির থেকে কম। তবে ভারত ও পাকিস্তানের থেকে বাংলাদেশ টিকা দেওয়ায় এগিয়ে আছে। গত ডিসেম্বরে এডিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৩৫তম।

প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমানোর মূল কারণ হিসেবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, উন্নত দেশগুলোতে ব্যাপক সংকোচনশীল মুদ্রানীতি, মূল্যস্ফীতি, করোনার নতুন ঢেউ, চীনের অর্থনীতির ধীরগতি ইত্যাদি কারণ বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট ও ভারতে সংকোচনশীল মুদ্রানীতির কারণে দক্ষিণ এশিয়ার জন্যও জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে সংস্থাটি।

এডিবি বলেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় চলতি বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। গত এপ্রিলের প্রতিবেদনে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল এশিয়ার এ অঞ্চলের জন্য।

অন্যদিকে, এ বছর এশিয়ার দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি বাড়বে বলেও মনে করছে এডিবি। সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় মূল্যস্ফীতি হতে পারে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। গত এপ্রিলের প্রতিবেদনে চলতি বছরের জন্য এ পূর্বাভাস ছিল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

এডিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশেই মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। গত মে মাসের হিসাবে এ অঞ্চলে সবচেয়ে কম মূল্যস্ফীতি মালদ্বীপে। দেশটিতে এ হার ছিল মাত্র ১ দশমিক ২০ শতাংশ।

এদিক থেকে শ্রীলঙ্কা তো বটেই; পাকিস্তান, নেপাল থেকে ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। গত মে মাসে শ্রীলঙ্কায় মূল্যস্ফীতি ছিল ৪৫ দশমিক ৩০ শতাংশ, পাকিস্তানে ছিল ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং নেপালে ছিল ৭ দশমিক ৯০ শতাংশ। বাংলাদেশে ছিল ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। ভারতের মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের তুলনায় সামান্য কম, ৭ শতাংশ।